প্রকাশিত: Sat, Jun 1, 2024 11:37 AM
আপডেট: Fri, May 9, 2025 7:17 PM

[১]ক্ষণগণনা শুরু আজ, কংগ্রেসের উচ্ছ্বাস সত্ত্বেও বিজেপি’র দিকেই বিশ্লেষকরা

শাহরিয়ার বিপ্লব: [২] ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সমাপ্তি হচ্ছে আজ। বৃহস্পতিবার ছিল প্রচারের শেষ দিন। শেষদিকে এসে সংখ্যাতত্ত্ববিদ ও রাজনৈতিক কর্মী যোগেন্দ্র যাদব দিলেন নয়া ভবিষ্যদ্বাণী। এর আগে তিনি দাবি করেছিলেন, ২৪০-২৫০ আসন পেতে পারে বিজেপি। এবার বলেছেন, বিজেপি ২৩০ আসন পেরোবে না। তাতেই উল্লসিত কংগ্রেস। 

[৩] যোগেন্দ্র যাদব যে নয়া ভবিষ্যদ্বাণীটি করেছেন সেটা ধরেই টুইট করলেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, যোগেন্দ্রর নতুন ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত। আগামী দিনে বেশ মজাদার সময় আসতে চলেছে। যোগেন্দ্র যে ভবিষ্যদ্বাণী করছেন, তাতে সরকার গড়তে পারবে না এনডিএ। সূত্র: ইন্ডিয়ান একসপ্রেস

[৪] আসলে যোগেন্দ্র যাদব শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন, এবার দেশজুড়ে কমবে বিজেপির আসন সংখ্যা। তবে শুরুতে তার বক্তব্য ছিল, বিজেপি একাই আড়াইশোর কাছাকাছি আসন পাবে। এনডিএ জোট হিসাবে পেরিয়ে যাবে ২৭২ আসন। কিন্তু সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, বিজেপি বিরোধী চোরাস্রোত যদি প্রবল হয়, তাহলে গেরুয়া শিবির নেমে যেতে পারে ২৩০ এর নিচে। আর বিজেপির জোটসঙ্গীরা বড়জোর ৩৫-৪০টি আসন পেতে পারে। 

[৫] যোগেন্দ্রর দাবি, এমনিতে কংগ্রেস এবার ৮৫ থেকে ১০০টি আসন পাবে। কিন্তু বিজেপি বিরোধী চোরাস্রেতে থাকলে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা পেরিয়ে যেতে পারে ১২০টি। শেষদিকে এসে ইন্ডিয়া জোটের নেতারা মনে করছেন তৃণমূল ছাড়াই তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। তারা ঘোষণা দিয়েছেন ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী ঠিক করবে ইন্ডিয়া জোট। (আনন্দবাজার ৩১-০৫-২০২৪)

[৬] বিজেপি বিরোধী চোরাস্রােতের বাইরে প্রকাশ্যে বোমা ফাটালেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। প্রচারনার শেষদিনেই দেশবাসীর উদ্দেশে কড়া সমালোচনায় খোলা চিঠি লিখলেন তিনি। দেশবাসীকে লিখলেও মূলত পাঞ্জাবের ভোটারদের উদ্দেশেই বার্তাটি দিতে চেয়েছেন। তিনি লিখলেন, মোদির আগে কোনো প্রধানমন্ত্রী জনসমক্ষে এত নিম্নমানের কথা বলেননি। মোদির কথার মধ্যে ছিলো ঘৃণা ও বিভেদ। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মর্যাদাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন। (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ৩১-০৫-২০২৪) 

[৭] ভারতীয় রাজনীতিতে জনগনের মনোভাবে অনিশ্চয়তার দোলাচল থাকলেও দেশীয় অনুভূতি, নমনীয়তা,আঞ্চলিক বৈচিত্রতাকে চূড়ান্তভাবে দেখার প্রয়োজনে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতি গঠন করার স্বার্থেই ভোটারগন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। শেষ ধাপের ভোটের হিসাব নিকাষ করতে গিয়ে এমন ভাবেই ভোটারদেরকে মূল্যায়ন করেছেন প্রখ্যাত রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুব্রত মিত্র। (নিউজগার্ড ৩১-০৫-২০২৪)

[৮] একই আংগিকে আরেকজন বিশ্লেষক সি আর শশীকুমার বলেন, ভারতীয় জাতীয়তাবোধ হল জনগনের আদর্শ, মূল্যবোধ, সম্মিলিত স্মৃতি, গভীরভাবে ধারণ করা বিশ্বাস ও ধর্মীয় অনুভতির সাথে যুক্ত। প্রতিটি নির্বাচনে প্রচারণার শেষে নেতাদের মূখে উচ্চারিত শব্দ ও ক্ষোভসমূহ ভোট দেয়া শেষ হয়ে গেলে মিলিয়ে যায়। তখন একটাই শব্দ থাকে। আর তা হল: ”কে জিতেছে?" ও  "কি জিতেছে?" প্রথমটির উত্তর গণতন্ত্রে সহজভাবে দেওয়া হয়। ভারতের নির্বাচনী খেলায় পরাজিতরা সাধারণত দ্রুত এবং সুন্দরভাবে পরাজয়কে স্বীকার করে নেয়। সুতরাং ৪ জুন সবাই মনে করছে একটি মসৃণ, সমস্যাবিহীন ধারাবাহিক সরকারের আশা করতে পারে। শশীকুমারের বিশ্লেষনকেও অনেকে বিজেপির জয়ের ধারাকেই অনুমান করছেন। (ইন্ডিয়ান এক্সপেস ৩১-০৫-২০২৪)

[৮] যাই হোক আজকে সবার চোখ উপকূলীয় এলাকা উড়িষ্যার দিকে।  যা গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতাসীন বিজেপি জোটের  দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত হয়েছে। এই রাজ্যের ৬টি লোকসভা কেন্দ্র এবং ৪২টি বিধানসভা বিভাগে প্রায় এক কোটি ভোটার চূড়ান্ত পর্বের নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যেখানে কংগ্রেস কঠিন নির্বাচনী যুদ্ধে উপনীত হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আধিপত্য, যা রাজনৈতিক হেভিওয়েটদের মর্যাদাপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র হিসাবে বিবেচিত হয়। (স্ট্যটসম্যান ৩১-০৫-২০২৪) সম্পাদনা: এম খান